কার কতটা পানি পান দরকার !!!

সঠিক পরিমাণে পানি পান করা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে শরীরের অনেক উপকার হয়। আবার অতিরিক্ত পানি পানে দেখা দিতে পারে নানা শারীরিক সমস্যা।

কার কতটা পানি পান দরকার।

বলা হয়,দিনে ৮ গ্লাস পানি সবার জন্য যথেষ্ট। এটা সামগ্রীক ভাবে বলা হয় একটা ধারনা দেবার জন।

যে চার্ট টি নীচে দেওয়া হল সেটা একটা সামগ্রীক ধারনা দেবার জন্য কিন্তু পানি পানের ক্ষেত্রে বয়স, লিঙ্গ, জীবনধারা আবহাওয়াও এমনকি কিছু অসুস্থতার জন্য বিবেচনা গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে কিডনি সংক্রান্ত জটিলতায়।

 

  •  শিশু

৪ থেকে ৮ বছড়

১’২ লিটার

৫ কাপ

 

৯ থেকে ১৩ বছড়

১’৬ – ১’৯ লিটার

৭ -৯ কাপ

 

১৪ থেকে ১৮ বছড়

১.৯-২.৬ লিটার

৮-১১ কাপ

  • প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য

পুরুষঃ ১৯+ বছর

৩ লিটার

১৩ কাপ

 

নারীঃ  ১৯+ বছর

২’১ লিটার

৯ কাপ

  • গর্ভবতী মায়েদের জন্য

 

২’৪ লিটার

১০ কাপ

  • নতুন মায়েদের জন্য

 

একই পরিমান

একই পরিমান

  • স্তন্যপান করানো নারী:

 

৩ লিটার

১৩ কাপ

  • পানি পান স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পর্যাপ্ত পানি পান করে সারা দিন হাইড্রেটেড থাকলে শরীরের অনেকস্বাস্থ্যেগত উপকার হয়। পরিমিত পরিমাণে পানি পান করা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজম ভালো হয়, শরীর হাইড্রেটেড থাকে এবং ত্বক ভালো থাকে।

পানি খাবার আরেকটি হিসাব রয়েছে,এটাও মেনে চলতে পারেন। আপনার ওজনের ওপরই মূলত নির্ভর করবে কতটা পানি খেতে হবে। অর্থাৎ যদি আপনার ওজন ৪৫ কেজি হয়, তাহলে যতটুকু পানি খাওয়া প্রয়োজন, ওজন ৯০ কেজি হলে পাল্টে যাবে সেই পরিমাণ। নিজের ওজনকে ২ দিয়ে ভাগ করে পানি খাওয়ার পরিমাণ বের করুন। যেমন আপনার ওজন যদি ১৭০ পাউন্ড (৭৭ কিলোগ্রাম) হয়, তাহলে আপনাকে ১৭০/২=৮৫ আউন্স (২.৫ লিটার) পানি খেতে হবে প্রতিদিন। এগুলি হচ্ছে সামগ্রীক হিসাব। কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে বদলে যাবে এই হিসাব গুলি যেমন-

  • আবহাওয়া:গরমকালে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে ঘাম বের হয়, তাই এই সময় বেশি পানি পান করা প্রয়োজন।শীতকালে পানির চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। 
  • শারীরিক কার্যকলাপ:যারা বেশি শারীরিক পরিশ্রম করেন, তাদের বেশি পানি পান করতে হবে।খেলাধুলা বা ব্যায়ামের পর শরীরে পানির অভাব পূরণ করা জরুরি। 
  • স্বাস্থ্যের অবস্থা:কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে, যেমন ডায়রিয়া বা বমি হলে, শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করার জন্য বেশি পরিমাণে পানি খেতে হয়।

কিছু নিয়মিত অভ্যাস আয়ত্তে আনলে পানি খাওয়া বিষয় জটিলতা এড়ানো যাবে।

  • সকালে উঠেই পানি খান। চা-কফি কিংবা নাস্তার আগে অবশ্যই এক বা দুই গ্লাস পানি খেয়ে নিন।
  • অফিসে বা বাসায় কাজের টেবিলে পানির বোতল রাখুন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে পানি খান।
  • শরীরচর্চার সময় একটি পানির বোতল সঙ্গে রাখুন। ব্যায়াম শুরুর আগে, মাঝে এবং শেষে অল্প অল্প করে পান করে শেষ করুন বোতল।
  • টয়লেট থেকে এসেই পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • পানির চাহিদা পূরণ করবে এমন ফল ও সবজি রাখুন খাদ্য তালিকায়। তরমুজ, শসা, পানির দৈনন্দিন চাহিদা মেটাবে।
  • পানির বোতলে পুদিনা, শসা বা সুগন্ধি ভেষজ ছেড়ে দিতে পারেন। এতে বেশ কিছু উপকারী মিনারেল

ও ভিটামিন পাবে শরীর। 

বেশি পানি পান করলে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে, যেমন হজমের সমস্যা, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, এবং শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা। বেশি পানি পানের কারণে যে সমস্যাগুলো হতে পারে: 

  • হজম প্রক্রিয়া ব্যহত হওয়া: খাবার খাওয়ার পরপরই বেশি পানি পান করলে হজমকারী এনজাইমগুলো পাতলা হয়ে যেতে পারে, যার ফলে হজম ঠিকমতো নাও হতে পারে এবং পেটে গ্যাস, অস্বস্তি বা বদহজম হতে পারে।
  • ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া: অতিরিক্ত পানি পান করলে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে প্রস্রাব বের হয়ে যায়, যার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হতে পারে।
  • শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট এর ভারসাম্যহীনতা: শরীরে সোডিয়াম, পটাসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।এটাকে লেক্ট্রোলাইটিক ইম্ব্যাল্যান্স বলে।
  • পেট ফাঁপা: অতিরিক্ত পানি পানে পেট ফাঁপা বা অস্বস্তি বোধ হতে পারে।

পানি বেশী বেশী খেলেও মারাত্মক শারিরীক সমস্যা দেখা যায়,শরীরে এই হঠাৎ এই পানীর প্রবাহ রক্তে পানির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে রক্তে ‘ইলেক্ট্রোলাইট’ নামে পরিচিত খনিজ পদার্থের ঘনত্ব কমেযায়, এর মধ্যে রয়েছে সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম। এটাকে তখন বলা হয়,  ইলেক্ট্রোলাইটিক ইমব্যালেন্স। এদিকেশরীরের কোষের ভেতরে খনিজ পদার্থের ঘনত্বের কম হয়ে যায়, এবং তাই ঘনত্বের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পানিশরীর থেকে কোষে প্রবেশ করা শুরু করে এবং তখন কোষগুলি ফুলে যায়। মস্তিষ্কে্র কোষ গুলির এই ফোলা“সেরিব্রাল এডিমা”- বিশেষভাবে বিপজ্জনক কারণ মস্তিষ্ক মাথার খুলির মধ্যে আবদ্ধ থাকে এবং এটি প্রসারিত হতে পারে না। তাই কোষের বর্ধিত চাপ মস্তিষ্কের ক্ষতি এমনকি মৃত্যুও ঘটাতে পারে।